কীবোর্ড এর কোন বাটনের কি কাজ জেনে নিন

আপনি যদি কিবোর্ড সম্পর্কে সকল তথ্য জানতে চান এবং কীবোর্ড এর কোন বাটনের কি কাজ সেগুলো সম্পর্কে জানতে চান তাহলে এই পুরো পোস্টে মনোযোগ সহকারে পড়ুন। এখানে কিবোর্ড সম্পর্কের সকল তথ্য দেওয়া হয়েছে।
                                                                                 

    
কীবোর্ড এর কোন বাটনের কি কাজ

কিবোর্ড কিভাবে কাজ করে

কী-বোর্ড একটি ইনপুট ডিভাইস। প্রতিটা কী এক ধরনের সুইচ। যখন কিবোর্ডের কোন কি-তে ক্লিক করা হয় তখন একটা ইলেকট্রিক সংকেত নির্দিষ্ট কলাম বা সারি বরাবর কী-বোর্ড প্রসেসরে যায়। CPU ঐ সংকেত দেখার পর নির্দিষ্ট কী-এর অবস্থান বুঝতে পারে এবং এনকোডারের সাহায্যে একটি বাইনারি কোড CPU-তে পাঠায়। এসকল কোডকে স্ক্যান কোড বলে। স্ক্যান কোডগুলো পূর্বনির্ধারিত ও নির্দিষ্ট। প্রতিটি কী-এর স্ক্যান কোড ভিন্ন। 

কম্পিউটারের মাদার-বোর্ডে কী-বোর্ড কন্ট্রোলার নামে এক ধরনের চিপ থাকে, যা কী-বোর্ড থেকে পাঠানো স্ক্যান কোডগুলো গ্রহণ করে মেমরিতে সংরক্ষণ করে। পরবর্তীতে স্ক্যান কোডের উপর ভিত্তি করে অপারেটিং সিস্টেম উক্ত কী-এর অর্থ নিরূপণ করে। প্রতিটি কী-এর জন্য অ্যাসকি কোড না হয়ে ইউনিকোড হবে তা অপারেটিং সিস্টেম নির্ধারণ করে দেয়। আর একারণেই একই কী-বোর্ড ব্যবহার করে যে-কোনো ভাষার বর্ণ ইনপুট করা সম্ভব ।

কীবোর্ড কত প্রকার কি কি

কী-বোর্ডকে প্রধানত আট ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলো হলো-
  1. এনহ্যান্সড কী-বোর্ড (Enhanced Keyboard)
  2. মাল্টিমিডিয়া কী-বোর্ড (Multimedia Keyboard)
  3. ওয়্যারলেস কী-বোর্ড (Wireless Keyboard)
  4. গেমিং কী-বোর্ড (Gaming Keyboard)
  5. নমনীয় কী-বোর্ড (Flexible Keyboard)
  6. ভার্চুয়াল কী-বোর্ড (Virtual Keyboard)
  7. মেমব্রেন কী-বোর্ড (Membrane Keyboard)
  8. মেকানিক্যাল কী-বোর্ড (Mechanical Keyboard)
১। এনহ্যান্সড কী-বোর্ড: Enhanced Keyboardগুলো বর্তমানে সবথেকে বেশি ব্যবহার করা হয়। Enhanced Keyboard খুব আধুনিক, এই কী-বোর্ডে অতিরিক্ত কী থাকে। বর্তমানে এই ধরনের কী-বোর্ডে ১০১ থেকে ১০২টি কী থাকে।

২। মাল্টিমিডিয়া কী-বোর্ড : Multimedia 'বেসিক কী-এর সাথে extra কিছু কী থাকে, যেমন- • ভলিউম কন্ট্রোল ইত্যাদি। তা ছাড়া Multimedia Keyboard-এর সাইডের দিকে USB. Microphone, Headphone ইত্যাদি অপশনও আছে।

৩। ওয়‍্যারলেস কী-বোর্ড : Wireless Keyboard-এর অর্থ হলো তারবিহীন কী-বোর্ড। ওয়ারলেস কী-বোর্ডে কোনো তার থাকে না। কম্পিউটার থেকে কিছুটা দূরে থেকে ওয়ারলেস কী-বোর্ডের দ্বারা কম্পিউটারে কাজ করা যায়। রেডিও ফ্রিকুয়েন্সি-এর মাধ্যমে ওয়ারলেস কী-বোর্ড ও ব্যবহারকারীর সাথে কম্পিউটারের Commuication হয়।

৪। গেমিং কী-বোর্ড: গেইম খেলার জন্য মূলত Gaming Keyboard তৈরি করা হয়েছে। গেমিং কী- বোর্ডের দাম নরমাল কী-বোর্ডের তুলনায় একটু বেশি হয়।

৫। নমনীয় কী-বোর্ড : Flexible Keyboardগুলোকে খুব সহজে ভাঁজ করা যায়, যার ফলে খুব সহজেই ব্যাগ বা পকেটে কী-বোর্ডকে বহন করা যায়। Flexible Keyboard-গুলোকে শুধুমাত্র Solid Surface রেখে ব্যবহার করা যায়।

৬। ভার্চুয়াল কী-বোর্ড : Virtual Keyboard হলো এক ধরনের স্ক্রিন কী-বোর্ড। কম্পিউটার স্ক্রিনে কী- বোর্ডে ছবি প্রদর্শিত হয় ও ব্যবহারকারীরা নিজের ইচ্ছেমতো মাউসের মাধ্যমে কম্পিউটারের স্ক্রিনের কী-বোর্ড key প্রেস করে নিজের কাজ করতে পারে। অনেক সময় ল্যাপটপের কী-বোর্ড নষ্ট হয়ে যায়। ল্যাপটপের কী-বোর্ডের দাম অনেক বেশি হয়। তাই Vritual Keyboard সাময়িক কাজের জন্য ব্যবহার করা যায়। কম্পিউটার ব্যবহার করার জন্য ফিজিক্যাল কী-বোর্ডের প্রয়োজন হয় না। স্ক্রিন কী-বোর্ডের মাধ্যমে সব কাজ করা হয় ও Vritual Keyboard-এর দামও কম হয়।

৭। মেমব্রেন কী-বোর্ডঃ Membrane-এর অর্থ হলো পর্দা। Membrane Keyboard রাবারের পদা দিয়ে তৈরি করা হয়। Membrane Keyboard-এর সুইচগুলোর ভিতরের দিকে রাবারের আবরণ দেওয়া থাকে। Normal use-এর জন্য Membrane Keyboardগুলো ব্যবহার করা হয়।

৮। মেকানিক্যাল কী-বোর্ডঃ মেকানিক্যাল কী-বোর্ড এর প্রত্যেকটা Key আলাদা হয়। প্রতিটি Key-এর সাথে স্প্রিং লাগানো থাকে। গেমার, প্রোগ্রামার বা Type-writer এদের জন্য মেকানিক্যাল কী-বোর্ড সবথেকে ভালো অপশন। কারণ হলো মেকানিক্যাল কী-বোর্ডের প্রতিটি সুইচগুলো আলাদাভাবে ডিজাইন করা থাকে।

কিবোর্ড এর অংশ কয়টি

কম্পিউটারের গুরুত্বপূর্ণ একটি ইনপুট ডিভাইস হলো কী-বোর্ড। কম্পিউটারে সব থেকে বেশিবার ব্যবহার করা হয় এই কী- বোর্ড। একটি কী-বোর্ডে ৮৪ থেকে ১০১টি কী (key) আবার কোনো কোনো কী-বোর্ডে ১০২ থেকে ১০৪টি কী (key) থাকে। সাধারণত একটি কী-বোর্ড এর ৫টি অংশ থাকে। যথা-

১। আলফাবেটিক কীঃ কী-বোর্ডে ইংরেজিতে A থেকে Z পর্যন্ত যে ২৬টি অক্ষর থাকে, তাকে আলফাবেটিক কী (Key) বলে।

২। নিউমেরিক কীঃ কী-বোর্ডের ডানপাশে ০ থেকে ৯ পর্যন্ত লেখা কী (Key) গুলোকে নিউমেরিক কী বলে।

৩। অ্যারো কীঃ কী-বোর্ডের ডান দিকে আলফাবেটিক কী (Key) ও নিউমেরিক কী এর মাঝে আলাদাভাবে যে ৪টি কী (key) থাকে সেই কী গুলোকে অ্যারো কী বলে।

৪। ফাংশন কীঃ কী-বোর্ডের উপরে F1 থেকে F12 পর্যন্ত যে ১২টি কী (Key)-গুলো থাকে, তাকে ফাংশন কী বলে।

কম্পিউটারের কিবোর্ড এর কাজ কি

কী-বোর্ডে সর্বমোট ১০৪টি কী বা বাটন রয়েছে, তবে কোনো কোনো কী-বোর্ডে ১০৫ ও ১০৮টি কীও হয়ে থাকে। কম্পিউটারকে Input দেওয়ার জন্য ও বিভিন্ন ধরনের Text টাইপ করার জন্য এই কীগুলো ব্যবহৃত হয় এবং বাটন ও Command-এর ভিত্তিতে এগুলোকে আবার ৬ ভাগে ভাগ করা হয়েছে এবং এর সবগুলোর কাজও আলাদা।

১। ফাংশন কী (Function keys)

২। টাইপিং কী (Typing keys)

৩। কন্ট্রোল কী (Control keys)

৪। নিউমেরিক কী (Numeric keypad)

৫। নেভিগেশন কী (Navigation keys)

৬। ইন্ডিকেটর লাইট (Indicator lights)।

১। ফাংশন কী (Function keys): কী-বোর্ডের একদম উপরে প্রথম সারিতে Left-এ F1 থেকে F12 পর্যন্ত যে Key-গুলে রয়েছে, সেগুলো Function Key বলা হয়। কোনো বিশেষ কাজ করার ক্ষেত্রে Function Key ব্যবহৃত হয়। এই কীগুলো অপারেটিং Systemসহ অনেক Program-এর শর্টকাট হিসেবে ব্যবহার ও প্রয়োজন হয় এবং প্রত্যেক প্রোগ্রামের কাজ আলাদা আলাদা।

২। টাইপিং কী (Typing keys) : Alphabet & Number key এগুলো টাইপিং কী-এর ভিতরে পড়ে এবং সব থেকে বেশি ব্যবহৃত কী হচ্ছে Typing keys-Text করার সময় নম্বর ও Alphabet লিখতে এই সকল Key এর দরকার হয়।

৩। কন্ট্রোল কী (Control keys) : Control keyগুলো অন্য কী-র সঙ্গে যোগ হয়ে নির্দিষ্ট কার্য সম্পন্ন করে থাকে। Menu key, Ctrl key, PrtScr key, Scroll key, Window key, Pause Break key, Shift এগুলো সব কন্ট্রোল কী-এর অন্তর্ভুক্ত। এই কী- গুলোর উপর Computer-এর কন্ট্রোল নির্ভর করে।

৪। নিউমেরিক কী (Numeric Keypad) : যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ, (*,+,=,/,?.-) এই সব করার জন্য যেসব নম্বর ও চিহ্ন ব্যবহৃত হয়, তাকে Numeric keypad বলা হয়। এগুলো কী-বোর্ডের Right site-এ নিচের দিকে রয়েছে।

৫। নেভিগেশন কী (Navigation Keys) 8 Delete, Page Up, Insert, Arrow keys, End, Page down, Home এগুলো হচ্ছে Navigation keys। কোনো নির্দিষ্ট পেজ এদিক লাইট সেদিক করার ক্ষেত্রে এর প্রয়োজন পড়ে।

৬। ইন্ডিকেটর (Indicator Lights) : Caps Lock, Num Lock, Scroll Lock এই তিনটি হচ্ছে Indicator Lights। নম্বর প্যাড ব্যবহার করা এবং এগুলো Capital letter ও Small letter লেখার জন্য ব্যবহৃত হয়।

কীবোর্ড এর কোন বাটনের কি কাজ

  • Alt- বিভিন্ন Program-এ বিভিন্ন নির্দেশ দেওয়ার ক্ষেত্রে পৃথক পৃথকভাবে ব্যবহার হয় এবং বিভিন্ন Command বানানো যায়।
  • Shift key- লেখার সময় বড় ও ছোট হাতের অক্ষর করার প্রয়োজন হলে নির্দিষ্ট কোনো Word এই Key-এর সাথে একসঙ্গে চেপে ধরলে অক্ষরটি সাথে সাথে বড় ও ছোট হাতের অক্ষর হয়ে যায়।
  • Print Screen- কম্পিউটার এর ডিসপ্লে তে যা কিছু থাকে তার সবগুলা প্রিন্ট করা দরকার হইলে এই কী-এর প্রয়োজন হয়।
  • Insert key- কোনো লেখার মধ্যে কোনো কিছু লেখার দরকার হলে তা সাধরাণত ডানপাশ থেকে লেখা হয়, তবে এই কী চেপে লিখলে তা আগের অক্ষরের উপর Over writing হয়।
  • Enter key- কম্পিউটারকে কোনো নির্দেশ দিয়ে সেটি কার্যকর করতে এই কী ব্যবহার করা হয় ও এক লাইনের লেখা শেষ করে পরের লাইনে বা অন্য লাইনে যাওয়ার জন্য Enter key ব্যবহৃত হয় এবং Enter key-এর সাহায্যে Ok button- এর কাজও হয়ে থাকে।
  • Pause Break- যদি Computer কোনো লেখা দ্রুত গতির জন্য পড়তে সমস্যা হয়, তবে এই কী চেপে তা ভালোভাবে পড়া যায়।
  • Tab key- পর্দায় অনুচ্ছেদ শুরুর স্থান, প্যারাগ্রাফ, কলাম, নম্বর ইত্যাদি প্রয়োজন অনুযায়ী প্রস্তুতের জন্য এই কী ব্যবহৃত হয় এবং কী-বোর্ড শর্টকাট-এর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়।
  • Ctrl key- কী-বোর্ড শর্টকাট-এর জন্য কাজে লাগে। এই কী কী-বোর্ডের Right ও Left-এ থাকে। এই কী-এর সঙ্গে বিশেষ কী একসঙ্গে চেপে Command দেয়া হয়।
  • Spacebar- দুটি ওয়ার্ড-এর মাঝে gap দেয়ার জন্য প্রয়োজন হয়।
  • Arrow key- কোনো Page-এর Right-Left ও Up-Down-এ যাওয়ার জন্য Arrow key ব্যবহৃত হয়।
  • Caps lock key- অক্ষর ছোট-বড় করার জন্য Caps lock key প্রয়োজন। লেখা বড় হাতের অক্ষর করার জন্য Caps lock key চালু করা হয়ে থাকে, আর Off করে দিলে লেখা পুনরায় ছোট হাতের অক্ষর হয়।
  • Backspace- কোনো লেখার পিছনের অংশ Delete করতে Backspace ব্যবহৃত হয়।
  • Number key-শূন্য(০) থেকে নয়(৯) পর্যন্ত যে Number-গুলে দেওয়া রয়েছে, সেগুলো Numeric লিখতে প্রয়োজন হয়।
  • Windows logo key- Start মেনু Open করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়।
  • Esc key- এটি বর্তমানে চালু হওয়া কোনো কিছু Off করতে এই কী প্রেস প্রয়োজন হয় ও কোনো নির্দেশ বাতিল করা হয়ে থাকে।
  • Delete Key-Select করা কোনো File এবং Text Delete করার জন্য কাজে লাগে।

শেষ কথা

আশা করি এতক্ষণে আপনারা কিবোর্ড এর সকল বিষয়ে ভালোভাবে বুঝতে পেরেছেন। এই পোস্টটি যদি আপনার ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করে দিবেন, যেন অন্যরাও এরকম গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেতে পারে। ওয়েবসাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url