কম্পিউটার ও ইন্টারনেট আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়

বর্তমান যুগ তথ্য প্রযুক্তির যুগ. আর এই যুগে কম্পিউটার ইন্টারনেটের ভূমিকা অনেক. তবে অনেকেই আছেন কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের প্রতি অনেক বেশি আসক্ত হয়ে পড়েছেন. সেদিকে লক্ষ্য রেখে আজকের এই পোস্ট. এই পোষ্টের মধ্যে আমরা কম্পিউটার ইন্টারনেট আসক্তি থেকে মুক্তির উপায় সম্পর্কে আলোচনা করব.
আসক্তি থেকে মুক্তির ৫টি উপায়

কম্পিউটার ও ইন্টারনেট আসক্তি থেকে মুক্তির উপায়

মাদকের ন্যায় কম্পিউটার গেম বা সামাজিক যোগাযোগ সাইটেও আসক্তি হতে পারে। তাই মাদকে আসক্তির জন্যে যা যা সত্যি, কম্পিউটার গেম বা সামাজিক যোগাযোগের সাইটে আসক্তির জন্যেও সেগুলো সত্যি। তাই আমরা বলতে পারি একবার আসক্ত হয়ে যাবার পর সেখান থেকে মুক্ত হওয়ার চেষ্টা করা থেকে কখনোই আসক্ত না হওয়া অনেক বেশি বুদ্ধিমানের কাজ। যারা এই আসক্তির ব্যাপারটি জানে না তাদের পক্ষে আসক্ত হয়ে যাবার একটা আশঙ্কা থাকে।

কম্পিউটার গেম এক ধরনের বিনোদন, কাজেই যারা কম্পিউটার গেম খেলবে তাদেরকে জানতে হবে অন্য যেকোনো বিনোদনের জন্যে যেটা সত্যি কম্পিউটার গেম খেলার বেলাতেও সেটা সত্যি কম্পিউটার এক ধরনের প্রযুক্তি। তাই অনেকেই কম্পিউটার ব্যবহার করে করা যেকোনো কাজকেই প্রযুক্তির এক ধরনের ব্যবহার বলে মনে করে, সেটা মোটেও সত্যি নয়। কম্পিউটার গেম খেলে মোটেও কম্পিউটার প্রযুক্তি সম্পর্কে ভালো জ্ঞান হয় না, খেলার আনন্দটা হয়। কাজেই কখনোই কম্পিউটার গেম খেলার কারণে নিজের দৈনন্দিন অন্যান্য কাজে যেন ব্যাঘাত না ঘটে সেটি সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে।

আশা করা যাচ্ছে তোমরা কখনো কম্পিউটার গেমে আসক্ত হবে না, ঠিক সেরকম তোমাদের চারপাশে যারা আছে তাদেরকেও কম্পিউটার গেমে আসক্ত হতে দেবে না। যারা কম্পিউটার গেমে আসক্ত হয়ে যায়, তাদের কিছু সুনির্দিষ্ট লক্ষণ থাকে। যেমন তাদের মাথায় সার্বক্ষণিক শুধু সেই গেমটার ভাবনাই খেলা করে, যখনই তারা সেই গেমটি খেলতে বসে তাদের ভেতরে এক ধরনের অস্বাভাবিক উত্তেজনা ভর করে, তাদের দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটতে থাকে।

লেখাপড়ায় অমনোযোগী হয়ে ওঠে। জোর করে তাদেরকে এই খেলা থেকে বিরত রাখা হলে তাদের শারীরিক অস্বস্তি হতে থাকে। সবচেয়ে যেটা ভয়ের কথা, অনেক কষ্ট করে এই আসক্তি থেকে মুক্ত হওয়া গেলেও হঠাৎ করে কোনো একটা কারণে আবার সেই আসক্তি ফিরে আসতে পারে। যারা কোনো কারণে কম্পিউটার গেমে আসক্ত হয়ে যায় তারা যদি এই আসক্তি থেকে মুক্ত হতে চায় তাহলে সবচেয়ে প্রথমে যে কাজটি তাদের করা উচিত সেটা হচ্ছে নিজের কাছে স্বীকার করা যে তাদের কম্পিউটার ইন্টারনেটের প্রতি আসক্তি রয়েছে.

তারপর তাকেজীবনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কী কী তার একটা তালিকা করতে হবে। সেই তালিকায় কম্পিউটার গেমের জায়গাটুকু কোথায় সেটি নিজেকে বোঝাতে হবে। তার জীবনের সমস্যাগুলোরও একটা তালিকা করতে হবে। সেই তালিকার সমস্যাগুলোর কোনো কোনোটি কম্পিউটার গেমের কারণে হয়েছে সেটাও নিজেকে বোঝাতে হবে। তারপর জীবনের গুরুত্বপূর্ণ কাজ লেখাপড়া, হোমওয়ার্ক, মাঠে খেলাধুলা, Extra Curricular Activities, পরিবারের সাথে সময় কাটানো, স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে সবকিছুর জন্যে সময় ভাগ করে রাখতে হবে। সেই সব কিছু করার পর যদি কোনো সময় পাওয়া যায় শুধু তাহলেই কম্পিউটার গেম খেলবে বলে ঠিক করে নিতে হবে। আস্তে আস্তে কম্পিউটার গেমস থেকে সরে এসে বিভিন্ন সৃজনশীল কাজে মনোযোগ দিতে হবে.

যারা সামাজিক যোগাযোগ সাইটে আসক্ত হয়ে গেছে তাদের বেলাতেও আসক্তি থেকে মুক্ত হওয়ার জন্যে একইভাবে অগ্রসর হতে হবে। প্রথমে নিজেকে বোঝাতে হবে এই ধরনের সাইটে অতিরিক্ত সময় দেওয়া আসলে এক ধরনের আসক্তি। প্রত্যেকবার যখন সামাজিক যোগাযোগ সাইটে কিছু একটা দেখতে ইচ্ছা করবে তখন নিজেকে জিজ্ঞেস করতে হবে সত্যি কি তার প্রয়োজন আছে? বিশেষ প্রয়োজন বা যদি প্রয়োজন না হয় তাহলে নিজেকে বিরত রাখতে হবে.

প্রত্যেকবার যোগাযোগ সাইটে ঢুকলে সেখানে কতটুকু সময় দেওয়া হয়েছে সেটা কোথাও লিখে রাখতে হবে। দিনে কত ঘণ্টা সময় দেওয়া হয়, সপ্তাহে কত ঘণ্টা, মাসে কত ঘণ্টা সেটা হিসাব করে সেই সময়টাতে সত্যিকারের কোনো কাজ করলে কতটুকু কাজ করা যেত সেটা নিজেকে বোঝাতে হবে।

সামাজিক যোগাযোগ সাইটে আসক্তি কমাতে হলে সেখান থেকে যোগাযোগের প্রয়োজন নেই এমন মানুষদের কাটছাট করে সংখ্যা কমিয়ে আনতে হবে। অন্য সব কাজ শেষ হওয়ার পর সময় থাকলেই এই সাইটে ঢোকা যাবে- এটি নিজেকে বোঝাতে হবে। পরীক্ষা কিংবা অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট-এর সাথে সামাজিক যোগাযোগ সাইট Deactivate করে ফেলার অভ্যাস করতে হবে। 

এভাবে ধীরে ধীরে নিজেকে অভ্যস্ত করে আসক্তিটক কমাতে কমাতে এক সময় পূর্ণভাবে মুক্ত হতে হবে।মনে রাখতে হবে জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত মূল্যবান। সেই মুহূর্তগুলো সত্যিকার কাজে ব্যয় না করে কোনো একটি আসক্তির পেছনে ব্যয় করা খুব বড় অপরাধ!

আমাদের শেষ কথা

হ্যাঁ,এটা ঠিক যে বর্তমান বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে গেলে কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের বিকল্প নেই. তবে আমাদের সবসময় এটা খেয়াল রাখা উচিত যে কম্পিউটার ইন্টারনেটকে যেন আমরা ব্যবহার করি কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের জন্য আমাদেরকে ব্যবহার না করে. অর্থাৎ এটার প্রতি যেন আমরা আসক্ত না হয়ে পড়ি. তাই সবসময় যতটুকু দরকার ততটুকু ইন্টারনেটে কম্পিউটারের সময় দেওয়া উচিত এবং এর প্রতি আসক্তি না নাই ভালো. যদি আপনাদের এই পোস্টটি ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করে দিবেন যাতে অন্যরাও এই সম্পর্কে জানতে পারে. আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ.

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url