শিক্ষনীয় হাসির ছোট গল্প - শিক্ষনীয় বাস্তব গল্প

আপনি কি এমন কিছু গল্প খুঁজছেন? যা পড়তে মজা লাগবে আর তার সাথে সাথে শিক্ষনীয় কিছু থাকবে সে গল্পের ভেতর। তাহলে আপনি সঠিক জায়গায় এসেছেন। আজকের এই পোষ্টের মাধ্যমে আমরা আপনাদেরকে এমন কিছু গল্প উপহার দিব যেগুলো একই সাথে মজাদার এবং শিক্ষনীয়। তো চলুন পড়ে নেওয়া যাক সে সকল মজাদার এবং শিক্ষনীয় গল্পগুলো।
                                                                           
শিক্ষনীয় বাস্তব গল্প

           

গল্প ১ঃ

একটি মেয়ে একটা আইসক্রিম ফ্যাক্টরির ম্যানেজার কাজ করত।তার কাজ ছিল, প্রতিদিন আইসক্রিম তৈরী এবং বিক্রির হিসাব রাখা ।একদিন কাজ শেষ হবার কিছু সময় আগে সে আইসক্রিম রাখার স্টোরেজ রুমে ঢুকল।যেটা মূলত কোল্ড স্টরেজ।তখন হুট করে বাইরে থেকে দরজাটি লক হয়ে যায়।সে অনেক চেষ্টা করলেও দরজা খোলা সম্ভব হয় নি।অনেক চিৎকার করেও লাভ হয় নি।

কারন ততক্ষণে অন্য সব কর্মী কাজ শেষ করে বেরিয়ে গেছে।আস্তে আস্তে সে ঠান্ডায় জমে যেতে লাগল।মৃত্যু আসন্ন সে কাঁদছে।কিন্তু তার বাঁচার কোন সম্ভাবনাই নেই।হঠাৎ বেশ অপ্রত্যাশিতভাবে একজন সিকিউরিটি গার্ড এসে দরজা খুললেন।এবং তাকে মুক্ত করলেন।মেয়েটি তখন তাকে জিজ্ঞেস করলেন, আপনার তো এখানে আসার কথা নয়। এখানে আসলেন কেন? 

গার্ড উত্তর দিলেন, আমি একটা দীর্ঘ সময় এখানে সিকিউরিটি গার্ডের কাজ করছি। প্রায় ৩৫ বছর। কিন্তু আমি এমন মানুষ খুব কম দেখেছি যারা প্রতি সকালে আমাকে সালাম দিয়ে ঢুকেছে এবং সন্ধ্যায় বের হবার সময় সালাম দিয়ে বেরিয়েছে।বেশিরভাগ মানুষ এমন আচরণ করত যেন তারা আমায় দেখতেই পায় নি কিন্তু আপনি ছিলেন। সেই মানুষ যে প্রতিদিন আমাকে দেখে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে সালাম করতেন। আজ সকালেও করেছেন।
♦কিন্তু সন্ধ্যায় আমি আপনার কাছ থেকে সালাম শব্দটি শুনতে পাইনি, তার মানে আপনি এখনো বের হন নি। আর তাই আমি আপনাকে খুঁজতে শুরু করি.......
♥আমাদের জীবন খুব ছোট।তাই সকলেই অন্যের সাথে ভালোব্যবহার করার চেষ্টা করি।

গল্প ২ঃ

বাইক এক্সিডেন্ট করে এক ব্যক্তির মাথায় আঘাত লেগেছে। তিনদিন পর জ্ঞান ফিরলে দেখা গেল তার স্মৃতিশক্তি চলে গেছে। ডাক্তার দেখেশুনে পরীক্ষা করে বললেন, আগের জীবনের কিছুই আর ইনি কখনো মনে করতে পারবেন না, শুধু...!আত্মীয় স্বজনরা একটু যেন আশার আলো পেলেন। আগ্রহী হয়ে জানতে চাইলেন, 'শুধু কি, ডাক্তার সাহেব?ডাক্তার সাহেব কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে বললেন, 'আগের জীবনের মাত্র একটা কথা সে মনে করতে পারবে। 

সেটা সে সবচাইতে বেশিবার শুনেছে, বলেছে বা ব্যবহার করেছে তার পুরো লাইফে। মনে রাখবেন, মাত্র একটা কথা। সেটা হতে পারে একটা মাত্র শব্দ, অথবা কোনো বাক্য।রোগী তখন ঘুমাচ্ছিলো।ফ্যামিলির সবাই একসাথে আলোচনায় বসলো।মা বললো, 'আমার ছেলে তার জীবনে সবচেয়ে বেশিবার আমাকে মা বলে ডাক দিয়েছে। ও অবশ্যই এই মা ডাকটাই বলবে।'অধিকাংশ জন ই সমর্থন করলো। বললো, হ্যা। মা ডাকের ওপরে তো কিছু নাই। মা তো মা ই।বউ মুখ বাকিয়ে বললো, 'আমার সেটা মনে হয়না। আমি ওকে গত বারো বছরে লক্ষ কোটিবার ভালোবাসি বলেছি। 

ভালোবাসার অঙ্গীকার করেছি। ও অবশ্যই আমার থেকে শোনা এই ভালোবাসি বা আই লাভ ইউ কথাটা বলবে, আমি শিওর।'পাশ থেকে একজন বললো, 'মানুষ তার জীবনে নিজের নামটাই বেশি শোনে, বলে, লেখে৷ এমনকি মানুষের কাছে সবথেকে সুন্দর শব্দটা হলো তার নিজের নাম। সে খুব সম্ভবত তার নামটাই মনে রাখবে।'অফিসের বস বললো, 'ও সেলসে ছিলো। প্রতিদিন হাজারবারক্লায়েন্টদেরকে থ্যাংকস বলত। ও এটাও মনে রাখতে পারে কিন্তু।'বাবার মনে ক্ষীণ আশা ছেলে তার নাম মনে রাখবে। মানুষের পরিচয়ই তো বাবার নামে। সবকিছু ভুললেও বাবার নাম কি কেউ ভুলতে পারে?একমাত্র মেয়ে বললো, 'আমিও বাবাকে জীবনে কমবার 'আব্বু' বলে ডাকিনি। আব্বু ডাকটাও তো শুনেছে অনেকবার। এটা মনে রাখলে আমি খুব খুশি হবো।

'ডাক্তার সবার আলোচনা শুনে বললো, 'আসুন, রোগীর ঘুম ভেঙেছে। আমরা উনাকেই জিজ্ঞেস করি।'ডাক্তার রোগীর কানের কাছে মুখ নিয়ে বললো, 'আপনার কি কিছু মনে পড়ছে?'রোগী না সূচক মাথা নাড়লো।ডাক্তার আবার বললো, 'একটু ভেবে দেখুন। মাত্র একটা কথা। যেটা আপনি আপনার জীবনে সবচাইতে বেশিবার বলেছেন বা শুনেছেন। মনে পড়ে কি সেই কথাটি?'রোগী এবার বেশ কিছুক্ষণ পর হ্যা সূচক মাথা নাড়লো। 

ঘরে উপস্থিত সবার মুখ থেকে একটা আনন্দসূচক আওয়াজ বেরোলো।ডাক্তার বললো, 'আপনি কি বলতে পারেন কি সেই কথাটি? যেটা আপনার স্মৃতিশক্তি হারানোর পরও মনে আছে। যে শব্দ বা বাক্যটা আপনি আগের জীবনে সবচেয়ে বেশিবার শুনেছেন অথবা বলেছেন। আমাদেরকে বলুন তো কি সেটা।'রোগীর ঠোঁট নড়ে উঠলো।সবাই উৎকণ্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করে আছে। 

কার কথা বলবে, মা/বাবা, ভালোবাসি,নাকি অন্যকিছু? মায়ের মুখে মাতৃত্বের অহংকার। বউ চায় তার ভালোবাসার স্বীকৃতি। বাবা অপেক্ষায় আছে নিজের সম্মানের।প্রত্যেকেই চিন্তিত মুখে একে অন্যের দিকে চাইলো।রোগীর মুখ দিয়ে ধীরে ধীরে বেরোলো সেই কথাটি।সবাই প্রচন্ড অবাক হয়ে স্পষ্ট শুনতে পেলো রোগী বলছে,
"বাবু খাইছো.....😂 🥴কেসা লাগা মেরা মাজাক🤣😂

গল্প ৩ঃ

এক পর্যটক একদিন এমন একটি শহরে বেড়াতে এলেন, যেখানে পুরো শহরটি ধার-দেনায় ডুবে ছিল। তো পর্যটক ভদ্রলোক ৫০০ টাকার একটি নোট হোটেলের কাউন্টারে দিয়ে বললেনঃ আমি আপনার হোটেলের ভেতরে যাচ্ছি। দেখি কামরা পছন্দ হয় কি না।হোটেল মালিক সঙ্গে সঙ্গে ঘিওয়ালার নিকট দৌড়োলেন। তাকে ৫০০ টাকা দিয়ে পুরোনো হিসাব মিটিয়ে দিলেন।ঘিওয়ালা টাকা হাতে পেয়ে দৌড়ালেন দুধওয়ালার কাছে। আর পৌঁছে ৫০০ টাকা দিয়ে তার হিসাব চকিয়ে দিলেন।

দুধওয়ালা গেলেন গাইওয়ালার নিকট। তাকে ৫০০ টাকা দিয়ে তার ধার শোধ করে দিলেন।গাইওয়ালা দৌড়ে গেলেনঘাসওয়ালার কাছে। ৫০০ টাকা দিয়ে তার হিসাব মিটিয়ে দিলেন।ঘাসওয়ালা টাকা হাতে আসতেই ওই হোটেলে দৌড়ে এলেন। ওখানে তিনি মাঝে মাঝে ধারে খাবার খেতেন। হোটেলের মালিককে সেই ৫০০ টাকা দিয়ে তিনি হাঁফ ছাড়লেন।কিছুক্ষণ পরে পর্যটক ভদ্রলোক ফেরত এলেন। তিনি ৫০০ টাকার নোটটি ফিরিয়ে নিয়ে বললেনঃ সরি, কোনো রুম পছন্দ হল না !না কেউ কিছু নিল, না কেউ কিছু দিল। অথচ সবারই হিসাব চুকে গেল!
গোলমালটা কোথায় ?
আসলে কোথাও কোনো গোলমাল নেই। সবারই ভুল ধারণা হল “টাকা আমার”। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, পৃথিবীতে খালি হাতে এসেছেন; খালি হাতেই ফিরে যেতে হবে।

উপসংহার

আজকের এই পোষ্টের মূল বিষয় ছিল শিক্ষনীয় গল্প । আর এই পোষ্টের মধ্যে তিনটি শিক্ষা এবং মজাদার গল্প উল্লেখ করা হয়েছে যা পড়ে মজা পাওয়ার সাথে সাথে কিছু শিখতে পারবেন। যদি আজকের এই ছোটগল্পের পোস্টটা ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই শেয়ার করে দিবেন যাতে অন্য এ সকল শিক্ষণীয় এবং সুন্দর সুন্দর ছোট গল্প পড়তে পারে। আমাদের ওয়েবসাইটটি ভিজিট করার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url